শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: অনশন ভাঙার প্রায় দুই সপ্তাহ পর আবার আন্দোলনে নামলেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীরা। নিজেদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
বুধবার বিকালে উপাচার্যের পদত্যাগ, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং বন্ধ করে দেওয়া বিকাশ অ্যাকাউন্টগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। বিকালে সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে মিছিলটি বের করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলা হয়। এতে আমাদের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে। পরে আমরা ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসি এবং আমাদের সঙ্গে আরও পাঁচ শিক্ষার্থী অনশনে বসে। প্রায় ১৬৩ ঘণ্টার বেশি সময় অনশন করি এবং ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। সে সময় সরকার থেকে আমাদের মামলা উঠানো এবং দাবি মানার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রায় ১৫ দিন হয়ে গেলেও আমাদের মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি এবং আমাদের চিকিৎসা এবং খাবারের জন্য সাহায্য করায় আমাদের সিনিয়র ভাইদের বিকাশ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো মামলা প্রত্যাহার হয়নি এবং অ্যাকাউন্টগুলোও খুলে দেওয়া হয়নি।
মামলা প্রত্যাহার ও বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়াসহ উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
গত ২৬ জানুয়ারি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল অনশনরত ২৮ জন শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙান। এরপর থেকে অহিংস আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ ও অনশন কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে চালিয়ে আসছিলেন তারা। এবার ১৪ দিন পর বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। পরদিন রবিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
১৫ জানুয়ারি বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় শাবি কর্তৃপক্ষ।
তবে তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কিলোতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন।